ভার্চুয়াল রিয়ালিটির দৌলতে আজ অবাস্তব জিনিসও দৃশ্যত হয়ে উঠেছে তরুণ প্রজন্মের কাছে, গেমেই তার প্রয়োগ ঘটিয়ে চলেছে তারা
বাস্তব জীবনে আমরা যা কিছু দেখি, সবই আমাদের আয়ত্তের মধ্যেই থাকে। কথার অর্থ হল বাস্তবিক সবকিছুই আমরা ছুঁতে পারি, অনুভব করতে পারি কিংবা উপভোগ করতে পারি। কথ্যভাষায় আমরা যাকে রিয়ালিটি বলেই সম্বোধন করে থাকি। অন্যদিকে, আবিষ্কারের দুনিয়াও কখনও থেমে থাকে না, প্রত্যেক মূহুর্তে নতুনের সন্ধানে ব্যতিব্যস্ত আধুনিক জগত। সেই আধুনিকতার অন্যতম আবিষ্কার হল ভার্চুয়াল রিয়ালিটি।
এই ভার্চুয়াল রিয়ালিটির সঙ্গে বাস্তবিক জীবনের সামঞ্জস্যতা নেই বললে কোনও ভুল হবে না। কারণ বাস্তবে আমরা যা ধরতে কিংবা অনুভব করতে পারি না, ভার্চুয়াল রিয়ালিটি সেই সকল উপকরণকে নিমেশেই রীতিমতো হাতের মুঠোয় এনে দিতে সচেষ্ট হয়।
তার উপর আবার গেমিং জগতের রমরমাকেও বাদ দেওয়া যায় না, কারণ বর্তমান যুব সমাজের অন্যতম সম্বলই গেমিং ইন্ডাস্ট্রি। এখানে একাধিক ই-স্পোর্টস টুর্নামেন্ট হয়ে উঠতে পারে একজন সাধারণ প্লেয়ারের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। গেমিং দুনিয়াও তাই নিত্য নতুন পরিবেশনায় মেতে থাকতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এবার প্রশ্ন হল ভার্চুয়াল রিয়ালিটি এল কোথা থেকে?
ভার্চুয়াল রিয়ালিটির ইতিহাস:
এটি সাধারণত একটি 3D ডিভাইস, যা কৃত্রিম জগতকে মানুষের সামনে তুলে ধরে। তবে, আজ থেকে বেশ কিছু বছর আগে প্রায় ১৯৭০ নাগাদ এই ডিভাইসের আগমণ, তবে একেবারেই তা গেমিং দুনিয়ার জন্য নয়। সে সময় এটি ব্যবহৃত হত চিকিৎসাবিদ্যা কিংবা সামরিক প্রশিক্ষণের খাতিরে।
তাছাড়া, এটির গঠন মোবাইলের মতো হলেও বস্তুটি একেবারেই আলাদা। কার্যত চোখের ওপর ধারণ করার ডিভাইস এই ভি.আর। তবে, ২০২২ সালে দাঁড়িয়ে এই ভার্চুয়াল রিয়ালিটির সঙ্গে স্বমহিমায় যুক্ত হয়ে গিয়েছে ‘গেম’ শব্দটি। তাই বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম ভি.আর গেম খেলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে কারণ গেম খেলার মূহুর্তে তারা গোটা পরিস্থিতিকে ভিজ্যুয়ালাইস করতে পারে চোখের সামনে।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক ভার্চুয়াল রিয়ালিটি গেমিং আসলে কী:
সাধারণত ভার্চুয়াল রিয়েলিটি গেমিং হল কম্পিউটার গেমগুলিতে 3D কৃত্রিম পরিবেশের প্রয়োগ। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এনভায়রনমেন্ট ভি.আর সফটওয়্যার দিয়ে তৈরি করা হয় এবং ব্যবহারকারীর কাছে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যে তারা বাস্তব-বিশ্বের পরিবেশকে ছাড়িয়ে যায়। পাশাপাশি, ব্যবহারকারীরা স্মার্টফোন, PC, ল্যাপটপ এবং গেমিং কনসোলে ভি.আর গেম খেলতে পারেন। তাছাড়া, ভি.আর গেমিং কন্ট্রোলে একটি স্ট্যান্ডার্ড কীবোর্ড এবং মাউস, গেম কন্ট্রোলার এবং মোশন ক্যাপচার পদ্ধতি জড়িত থাকতে পারে। অন্যদিকে, এই ভি.আর গেম তালিকার মধ্যেও রয়েছে একাধিক পরিচিত গেমের নাম।
চলুন কিছু ভি.আর গেমের বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক :
ভি.আর গেমগুলির মধ্যে তালিকার প্রথমেই রয়েছে Among Us VR গেমের নাম। সাধারণত এটি হল একটি সামাজিক ডিডাকশন ভিডিও গেম যা শেল গেমস , ইনারস্লথ এবং রোবট টেডি দ্বারা নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও, রয়েছে Beat Saber, Half-Life: Alyx, Pavlov VR, Phasmophobia-র মতো একাধিক ভি.আর ভিত্তিক গেম। যেখানে গেমগুলিকে প্রাণোচ্ছলভাবে উপভোগ করার একমাত্র মাধ্যমই হল এই ভি.আর ডিভাইসটি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই Phasmophobia হল সাধারণত একটি হরর ভিডিও গেম। তবে, কোনও প্লেয়ার গেমটি খেলার সময় সেই অর্থে ভয় অনুভব না করলেও ভি.আরের মাধ্যমে সেই প্লেয়ারও ভয় পেতে বাধ্য। আপনারা ভি.আর গেমের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এই ইউটিউব ভিডিওটি ফলো করতে পারেন।
সবশেষে বলা যায়, চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি Sony কর্তৃক লঞ্চ হতে চলেছে PlayStation VR2 ডিভাইস, যা নিয়ে অনুরাগী মহলের উত্তেজনা রীতিমতো তুঙ্গে রয়েছে।